জীবন-প্রান্তরে এক নিঃসঙ্গ পথিক - অপু চন্দ্র বর্মন

জীবন-প্রান্তরে এক নিঃসঙ্গ পথিক - অপু চন্দ্র বর্মন

জীবন-প্রান্তরে এক নিঃসঙ্গ পথিক

অপু চন্দ্র বর্মন

শৈশব থেকে যাত্রা আমার—
নিরন্তর বেদনার করুণ কাব্য।
আমি যেন এক বিস্মৃত পল্লির
নির্বাসিত শালগাছ,
যার পত্রহীন ডালে জড়ায় শুধু
ধূসর স্মৃতির শোকস্নিগ্ধ ধারা।

আমার হৃদয়—
উত্তপ্ত মরুভূমির মতো,
যেখানে নেই কোন বারিধারা,
নেই কোনো শীতলতার আভাস।
আশা এসেছে ধূলিকণার পাখায়,
উড়ে গেছে দূরাগত দিগন্তে,
ফিরে আসেনি কভু,
ঠিক যেমনি
পথভ্রষ্ট সারস ফিরে আসে না গৃহে।

কর্মহীন দুপুরগুলো
অকথ্য অতৃপ্তির মতো গুমরে কাঁদে,
ঘরের কোণে জমে থাকা
ধূলোয় মোড়া বাতিল চিঠির মত।
চাকরির জন্য যাত্রা—
বালুকাবেলার বুকে লেখা নাম,
যা ঢেউ এসে প্রতিক্ষণে মুছে দেয়
নিঃসঙ্গ নীরবতায়।

পার্থিব সমাজের চোখে আমি
একটি পরিত্যক্ত পুরাতন পাণ্ডুলিপি,
যার পৃষ্ঠায় কেবল বেদনার গাথা,
আলো নেই, উষ্ণতা নেই,
আছে শুধু তপ্ত হেমন্তের মত একঘেয়েমি।

আমার দিনগুলি পাথরের ন্যায়—
শক্ত, নিরাবেগ, অনুভূতিহীন।
রাত্রিগুলি যেন অন্ধ গুহার জ্যোৎস্নাহীন পৃষ্ঠ,
যেখানে প্রতিধ্বনি ফেরা কণ্ঠস্বরও
আত্মবিস্মৃত।

তবুও আমি লিখি,
লিখি আত্মার রক্তে;
কলমে নয়, কান্নায়।
বাঁচার জন্য নয়,
অস্তিত্ব জানানোর জন্য।
কবিতা আমার
মৃত্যুর মধ্যেও জীবনের আর্তনাদ।

Next Post Previous Post