নিঃশব্দের গিলে খাওয়া - অপু চন্দ্র বর্মন | বাংলা কবিতা
নিঃশব্দের গিলে খাওয়া
– অপু চন্দ্র বর্মন
জীবনটা বড়ই নিষ্ঠুর, সময় গিলে খাচ্ছে প্রতিদিন নিঃশব্দে অবিরাম
ক্লান্ত হৃদয়ে ঝরে পড়ে যন্ত্রণার দীর্ঘশ্বাস বৃষ্টির মতো ঘনঘোর
রাত্রি ভিজে যায় নীরব কষ্টে, জেগে থাকে ছায়াপথ একা একা
ভালোবাসা আজ অচেনা ছবি, হঠাৎ থেমে যাওয়া বেদনায় বাঁধা
শুধুই অভিমান জমে থাকে কথা না বলা অশ্রু দিয়ে সাজানো
দুঃখেরা আজ বন্ধু হয়ে ঘিরে থাকে প্রতিটি চেনা-অচেনা সকাল
ভোরের আলোয় নেই আর আশ্বাস, ঘরে কেবল অন্ধকার
চেয়েছিলাম একটু প্রশ্রয়, পেয়েছি কেবল অবহেলার ছায়া
ভবিষ্যৎ বলেছিলো হাসবে, কিন্তু ঠকিয়েছে নীরবতায়
মনের আকাশ মেঘে ঢেকে গেছে, রোদের রেখা নেই
তুমি যে ছিলে, ছিলে তো? এখন কেবল প্রশ্ন পড়ে
চিঠির পাতায় শুকনো গোলাপ নেই, কেবল শূন্য
হৃদয় কাঁদে, ঠোঁট হাসে না আর, চুপ করে থাকে
আয়নাতে দেখি ভাঙা আমি, অচেনা এক প্রতিবিম্ব
হেঁটে চলি ভুল ঠিকানায়, গন্তব্য ছাড়া দীর্ঘ পথ
সময় যেন হিংস্র নদী, ভাসিয়ে নিচ্ছে প্রতিটি স্বপ্ন
ভবিষ্যতের খাতায় আজ কেবল দুঃখের অঙ্কুর
অতীতের প্রতিধ্বনি আজও বাজে নিঃসঙ্গ সন্ধ্যায়
প্রেমের ভাষা মুছে গেছে, ব্যথা লিখেছে উপাখ্যান
এক এক করে নিভে যায় সব আলো, নিভে যায় আশা
কবিতারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, গান হয়ে ওঠে নীরব
অর্থহীন জীবনের গল্পে হারিয়ে গেছে সব চরিত্র
আমি কেবল ছায়া, এক জীবন্ত ভাঙা প্রতিচ্ছবি
সবুজ স্বপ্ন আজ ধূসর ধোঁয়ায় ঢাকা পড়ে গেছে
রঙহীন রোদে শুকিয়ে যায় মনখারাপ পাতারা
শুধু রাত থাকে, আর থাকে না ঘুমের আলয়
অন্ধকারে গেঁথে থাকে কষ্ট, জ্বলে নীরব আগুন
দেয়ালে লেখা ক্যালেন্ডারও চুপ হয়ে গেছে আজ
বসে থাকি স্মৃতির বারান্দায়, বৃষ্টি ছোঁয় না আর
দেখি না তোমাকে, শুনি না আর সেই ডাক
রাস্তাগুলোও আজ চেনে না এই পায়ে চলা
ক্লান্তির রাজ্যে আমি শুধু সময়ের যাত্রী
তুমি নেই, থাকছো না, আসবে না আর
তবু অপেক্ষার নামেই রয়ে যাই
এই মন এক পোড়া মাঠ যেন
বৃষ্টি চায়, বৃষ্টি আর আসে না
সব আশা এখন মৃত নদী
চোখে শুধুই ঘুমহীন রাত
কণ্ঠে জড়ানো দীর্ঘশ্বাস
বুকের ভিতর কাঁপে ব্যথা
হারিয়ে যাওয়া স্বপ্ন আমি
প্রতিচ্ছায়া এক অতীত
আজ শুধু নিঃশব্দ
অন্ধকার
খালি
শূন্য
তুই