তুমি চইলা যাওনের পর

আমার এই অভাগা জীবনে এক্কান মায়াবতী মাইয়া আইছিলো। আমি পড়ালেহা না জানা মানুষ, কাজ কাম কইরা দিনে আইন্না দিনে খাই, মাঝেমধ্যে খাইয়া বাঁচলে আডানা একানা জমাইতাম। আমার এহনোও মনে আসে একদিন মাটির ব্যাংক ভাইঙা জমানো সব টেহা দিয়া মেলা থেইকা একটা কালো টিপের পাতা আর একটা লাল রঙের আলতা কিন্না দিসিলাম তারে.. তার লগে দেহা হইলে আমি যহন তারদিকে ফ্যালফ্যাল কইরা চাইয়া থাকতাম তহন হেয়ও আমার দিকে ড্যাব ড্যাব কইরা চাইয়া কথা কইতো আমার লগে.. চান্দের লাহান মায়াভরা মুখটার দিকে একবার তাকাইলেই আমার মনডা একদম জুড়াইয়া যাইতো.. আমার জীবনের সবকিসু উজার কইরা বিলাইয়া দিছিলাম তারে.. জোৎস্না ভরা এক রাইতে ময়না আমারে কথা দিসিলো আমাগো বলে একটা টোনাটুনির সংসার হইবো, ঝাল কম লবণ বেশি হইলেও ভালোবাইসা খাইয়া নেওয়া হইবো। এতো ভালোবাসা কি আর আমগো মতো মাইনষের কপালে জুটে! যারে একদিন না দেখলে কইলজাডার মধ্যে কেমন জানি মোচড় দিয়া উঠতো আইজকা বছর খানেক হইয়া গেলো তার লগে কোনো দেহা সাক্ষাৎ হয় না.. এক্কান লাল রঙের বেনারশি পইড়া বড়লোক একটা পোলা দেইখা বিয়া কইরা লাইসে আমার ময়নায়.. হুনসি পোলা নাকি বিদেশে চাকড়ি করে, মেলা টাকা কামায় করে.. মাইনষে আমারে কয় ময়না চইল্লা যাওনের পরে আমি নাকি পাগল হইয়া গেসিলাম। তহন আমার মায়ে আমারে জ্বোর কইরা ধইরা ডাক্টারের কাসে নিয়া যায়.. ডাক্টারে আমারে দেইখা লম্বা একটা ঔষধের লিস্ট ধরাইয়া দেয়। অথচ আমি প্রেসক্রিপশনে চাইয়া দেহি কোথাও তোমার নামডা লেহা নাই.. ডাক্টাররে আমি তোমার কথা কইতে না কইতেই ডাক্টারে আমারে ধরাইয়া দিলো একটা সার্টিফিকেট, যেইখানে বড় কইরা লেখা "পাগল"... লেখা: তারিফ হুসাইন
Next Post Previous Post