একটি হৃদয়ছোঁয়া গ্রামীণ জীবনের গল্প - দুই প্রাণের বন্ধন
দুই প্রাণের বন্ধন
লেখক: অপুর চন্দ্র বর্মন মেলোডি
শীতের আগমনে…
শীতের সকাল। সূর্য সবে উঠেছে, আর গ্রামের মেঠোপথে কুয়াশা ঢেকে আছে পুরো পরিবেশ। এই নিস্তব্ধ গ্রামে প্রকৃতি যেন অন্য এক রূপে সেজে উঠেছে। শুভ্র নদীর পাড় দিয়ে হাঁটতে বের হয়েছে। তার প্রতিটি পায়ের পদধ্বনি যেন মাটির সাথে এক আত্মিক সম্পর্ক গড়ে তুলেছে।
লতা, শুভ্রর স্ত্রী, প্রতিদিন ভোরেই নদীর পাড়ে যায়। ঠান্ডা জলে পা ভেজায়, হাত দিয়ে জল নিয়ে মুখ ধুয়ে ঈশ্বরের স্মরণে ডুবে যায় কিছুক্ষণের জন্য। তাদের কাঁচা মাটির দেয়ালের ছোট্ট কুটিরে জীবনের তাগিদে কঠোর পরিশ্রমে দিন কাটে। তবে এই কষ্টে যেন তাদের কোনো অভাব বোধ হয় না।
লতার প্রতিদিনের জীবন…
গ্রামের জীবনের একঘেয়েমি ভেঙে আসে নানা রকম প্রতিদিনের কাজে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত লতা নিজে গৃহস্থালীর কাজে ব্যস্ত থাকে। বাড়ির সব কাজ শেষ করে সে নিজের হাতে সেলাইয়ের কাজ নিয়ে বসে। সেলাই করা কাপড় বিক্রি করেই তার কিছু অর্থ আয় হয়, যা সংসার চালানোর জন্য তার সহায়ক হয়।
এদিকে শুভ্রও মাঠে পরিশ্রমী কৃষকের মতো কাজ করে। শীতকালীন ফসলের জন্য জমি প্রস্তুত করা, মাঠে বীজ বোনা এবং সেচের কাজ সবকিছুই সে একা হাতে সামলায়। তাদের কষ্টের মাঝে সুখী এক সংসার।
কঠিন সময়ের আঘাত…
একদিন হঠাৎ জীবনের এই শান্ত ধারায় ভাঙন আসে। শুভ্র মাঠে কাজ করতে করতে প্রচণ্ড ক্লান্ত হয়ে পড়ে। সে তার শরীরে এক ধরনের অস্বস্তি অনুভব করে। কিছুদিনের জন্য কাজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়।
লতা শুভ্রর পরিবর্তিত অবস্থায় চিন্তিত হয়ে পড়ে। সে বুঝতে পারে, সংসারের সমস্ত দায়িত্ব এখন তার উপর পড়েছে। সে নিজের হাতে সেলাইয়ের কাজ আরও বাড়িয়ে দেয়, তবুও সংসারের খরচ মেটাতে কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়।