অপেক্ষার অভিসার - অপু চন্দ্র বর্মন

অপেক্ষার অভিসার | বাংলা প্রেমের কবিতা

অপেক্ষার অভিসার

লিখেছেন: অপু চন্দ্র বর্মণ

অতিশয় স্নেহে পূর্ণ, হৃদি আমার করে নিতেছ
তব স্মৃতি-সঞ্চিত বাণী, হৃদয়ে সদা জাগ্রত।
প্রেমস্পন্দনে নিত্য আমি, বিহ্বল, বিমোহিত।
তব অভিসারপথে আমি, একাকী অতন্দ্র প্রহর গুনি।
কুসুম-সম মনোহর তুমি, জীবনের একমাত্র আলো।

মধুর মমতা-সিক্ত, তব চাহনি বিষ্ণুতুল্য।
হৃদয়বেদনা হয়ে উঠে, যবে দূরত্ব বেড়ে যায়।
তব উক্তি সদা ধ্বনিত হয়, মর্মমাঝে মধুরতা হয়ে।
অতল সাগরসম প্রেম, প্রবাহিত হয় অবিরত।
হৃদয়দগ্ধ চেতনায় আমি, তব শ্রীমুখ কল্পনা করি।

অর্ঘ্য দিই চিরকাল, তব প্রেমের চরণে।
করজোড়ে নিবেদন করি, তব সান্নিধ্যের আকাঙ্ক্ষা।
দিবস রজনী কাটে, প্রেমানল জ্বালিয়ে।
হৃদয়মন্দিরে প্রতিষ্ঠিত তুমি, দেবী সম মঙ্গলময়ী।
শুদ্ধ প্রেমাবেগে জাগে, অনন্ত শপথের দ্যুতি।

তব প্রত্যাবর্তনই হউক, জীবনের একমাত্র তীর্থ।
আকাঙ্ক্ষা কাঁপে অন্তরে, স্নেহময় তব স্পর্শে।
প্রেমপূর্ণ বাক্যগুলি, অলংকার রূপে ঝলমল করে।
হৃদয়াঞ্জলিতে রাখি আমি, তব প্রতীক্ষার প্রদীপ।
অরুণ আভাসে জাগে আশা, তব পুনরাগমনের।

মায়াময় সঞ্জীবনী তুমি, হৃদয়কুঞ্জের দীপ্তি।
প্রেমপঙ্কজ বিকশিত হয়, তব একটুখানি হাসিতে।
অমৃতধারার মতো বয়ে যায়, তব মুখনিঃসৃত শব্দ।
তব শোভা চিরনবীন, মৌন ব্যাকুল হৃদয়ে।
অনুভব করি দিবানিশি, তব অস্তিত্বের সুবাস।

নৈঃশব্দ্যের নীড়ে শুনি, তব পদচারণার ছন্দ।
মাধুর্যের মহাসিন্ধু তুমি, প্রেমের পারাবার বয়ে যাও।
চিরন্তন প্রেমপথে আমি, তব অনুসরণে নিবদ্ধ।
হৃদয়কম্পনে জাগে, তব একটুখানি সান্নিধ্য।
প্রেমদীপ্ত দৃষ্টিপাতে, ধ্বংস হয় নিঃসঙ্গতা।

তব নিস্পন্দ চাহনি, হৃদয়ে বয়ে আনে ঝড়।
চিরন্তন তৃষ্ণা জাগে, তব স্পর্শাবিলাষে।
হৃদয়তন্ত্রীতে বেজে উঠে, প্রেমের গম্ভীর রাগ।
তব প্রতীক্ষায় বিহ্বল আমি, প্রহরে প্রহরে উদগ্রীব।
হৃদয়কোষে লুকানো প্রেম, নিরবধি জ্বলিত দীপ।

অনুপম সৌন্দর্যের তুমি, প্রেমময়ী প্রতিমা।
নিশীথে জাগে আকুলতা, তোমারে স্মরিয়া।
তব নামপাঠে উদিত হয়, প্রেমাশ্রুর স্রোত।
চিরকালের তৃষ্ণা তুমি, হৃদয়বৃক্ষের ফল।
প্রেমময় কল্পনায় আমি, নির্মাণ করি তোমার মন্দির।

তব অনুপস্থিতি হৃদয়ে, যেন কটুভার নিক্ষেপ।
প্রেমমগ্ন চেতনা আমার, সন্ধান করে প্রতিমুহূর্তে।
মর্মান্তিক বিরহাবেগ, অভিষিক্ত তোমার স্মৃতিতে।
প্রেমপ্রদীপ জ্বলিত থাকে, দিগন্তছোঁয়া আশায়।
তব সান্নিধ্য চাই, চিরকাল সঙ্গী করে।

হৃদয়দেবালয়ে শুধুই তুমি, অন্য কারো স্থান নেই।
প্রণয়গান গাই সারাক্ষণ, তোমার নামে মগ্ন হয়ে।
অন্তর্লীন কামনা বলে, তুমি একমাত্র আশ্রয়।
হৃদয়তরণীতে তুমি, প্রেম-পথের দিশারী।
প্রেমের মৌনবাণীতে শুনি, তব আত্মিক আহ্বান।

প্রেমদগ্ধ আমি, তব দর্শনের আকাঙ্ক্ষায় নিঃশেষ।
হৃদয়াঞ্জলিতে সংরক্ষিত, তব নামের অমৃতরাশি।
অনুক্ষণে বয়ে চলে, তব স্মৃতির মনোহর সুর।
চিরঅপরূপ তুমি, হৃদয়াধিপতি রূপে।
প্রতীক্ষা হয় আনন্দময়, তব প্রেমের আশ্বাসে।

হর্ষধ্বনি বাজে অন্তরে, তব একটুখানি বার্তায়।
তব পরশের আশায়, হৃদয় স্থির থাকতে পারে না।
প্রেমদীপ অন্ধকারে জ্বলে, তব প্রভাময় স্নেহে।
হৃদয়ের গহন অন্তরালে, শুধুই তুমি দীপ্তিমান।
বিরহবেদনায় তুমি, হয়ে ওঠো আরও প্রিয়।

প্রেমবিন্দু ছড়িয়ে পড়ে, তব মধুর অভিসারে।
হৃদয়গ্রন্থি বাঁধা পড়ে, তব একটুখানি চাহনিতে।
প্রেমময় অনুভব হয়, তব নামোচ্চারণেই।
হৃদয়সংগীত বাজে, প্রেমরসে অভিষিক্ত।
চিরস্মরণীয় তুমি, হৃদয়ের অক্ষরে অঙ্কিত।

প্রেমপূজার অর্ঘ্য হয়ে, তুমি অধিষ্ঠান কর হৃদয়ে।
জীবনের প্রতিটি প্রহর, তব শুভাশীষে আলোকিত।
প্রেমসঞ্চারিণী তুমি, হৃদয়ের মঙ্গলসূত্র।
স্মৃতির সরোবর জুড়ে, বয়ে চলে তব ছায়া।
অনন্ত প্রতীক্ষায় আমি, তোমার চরণচিহ্ন খুঁজি।

তব কণ্ঠস্বর শুনিতে পাই, অন্তরে প্রতিধ্বনিত।
প্রেমাধার হৃদয় আমার, শুধুই তোমার আরাধনায় নিবেদিত।
হৃদয়কবচ খুলিয়া, আত্মা উন্মোচিত করি তোমার নামে।
প্রেমপদ্ম প্রস্ফুটিত হয়, তব অনুগ্রহে।
প্রেমাকুল আত্মা চায়, তোমার সান্নিধ্যের অমৃত।

প্রেমতৃষ্ণা দগ্ধ করে, তোমার নিরবতা।
হৃদয়-অঙ্গনে বিরাজ কর, চিরকালীন প্রেমদাত্রী রূপে।
চেতনায় তুমি, অবচেতনে তুমি, প্রতিক্ষণে তুমি।
প্রেমপথের আলোকবর্তিকা, তুমি একমাত্র নায়িকা।
তব চরণে নিবেদন, প্রেমসমর্পণের শপথ।

স্মৃতির কুসুমে সাজাই, তব নামের মালা।
প্রেমানলে দগ্ধ হই, তব স্নেহাবিষ্ট হৃদয়ে।
তব একটুখানি চাহনিতে, আত্মা কেঁপে উঠে।
তব বিরহে হৃদয়, শুষ্ক মরুভূমির মতো।
হৃদয়কাব্যে তব নাম, চিরকাল লেখা থাকবে।

প্রেমপুষ্প ফোটে, তব একটি হাসিতে।
স্মৃতির নদীতে ভেসে যায়, হৃদয় আমার অনর্গল।
প্রেমের অধিরতা, প্রশান্ত হয় তব আলিঙ্গনে।
হৃদয়বীণায় ধ্বনিত হয়, তব নামে মোহময় সুর।
প্রেমপথিক আমি, তবই প্রেমলক্ষ্য।

প্রতীক্ষায় অন্তর কাঁপে, প্রেমস্মৃতির ঝড়ে।
তব করুণাময় দৃষ্টি, হৃদয়কে করে তপ্ত।
প্রেমচেতনার উন্মেষ, তব অন্তরঙ্গ বাণীতে।
স্মৃতির নৈবেদ্য সাজাই, তব আগমনের আশায়।
প্রিয়তম তুমি, চিরন্তন হৃদয়সংগী।

প্রেমপথের নিঃসঙ্গ যাত্রী আমি, তোমার আলো খুঁজি।
হৃদয়পটে আঁকা আছে, তব চিরন্তন মুখচ্ছবি।
প্রেমজ্যোতিষ্ক তুমি, হৃদয়াকাশের দীপ্ত নক্ষত্র।
হৃদয়চিত্রে আঁকা প্রেম, শুধু তোমারই রূপে উজ্জ্বল।
চিরদিনের জন্য বলি — তোমাকেই আমি ভালোবাসি।


এই কবিতাটি লিখেছেন অপু চন্দ্র বর্মণ। এটি প্রেম, বিরহ ও আত্মিক আকাঙ্ক্ষার এক অবিস্মরণীয় প্রকাশ। শেয়ার করুন যদি হৃদয়ে ছুঁয়ে যায়।

Next Post Previous Post